ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ এখন বিশ্বস্বীকৃত: প্রধানমন্ত্রী

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ এক সময় নিষিদ্ধ ছিল উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এই ভাষণ এখন বিশ্বস্বীকৃত। জাতিসংঘের প্রতিটি ভাষায় এই ভাষণের অনুবাদ প্রচার করা হচ্ছে। ইউনেস্কো সেই পদক্ষেপটা নিয়েছে। ইতিহাসকে এতো সহজে মুছে ফেলা যায় না। সত্যকে কখনো দাবিয়ে রাখা যায় না। তাই আজকে সত্য উদ্ভাসিত হয়েছে।

ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ এখন বিশ্বস্বীকৃত: প্রধানমন্ত্রী

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ এক সময় নিষিদ্ধ ছিল উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এই ভাষণ এখন বিশ্বস্বীকৃত। জাতিসংঘের প্রতিটি ভাষায় এই ভাষণের অনুবাদ প্রচার করা হচ্ছে। ইউনেস্কো সেই পদক্ষেপটা নিয়েছে। ইতিহাসকে এতো সহজে মুছে ফেলা যায় না। সত্যকে কখনো দাবিয়ে রাখা যায় না। তাই আজকে সত্য উদ্ভাসিত হয়েছে।

রোববার (৭ মার্চ) বিকালে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় আয়োজিত ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ ২০২১ উদযাপন উপলক্ষ্যে এক ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় তিনি একথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত অনুষ্ঠানে যুক্ত হন।

অনুষ্ঠানের শুরুতে জাতীয় সংগীত পরিবেশন করা হয়। এরপর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণ প্রদর্শন করা হয়। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র প্রান্তে অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। আরও বক্তব্য রাখেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দিপু মনি এবং মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মুজিববর্ষ উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির প্রধান সমন্বয়ক কামাল আব্দুল নাসের চৌধুরী। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব বদরুল আরেফীন।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণের পটভূমি তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, একটি জাতির জন্য তিনি শুধু রণকৌশলেই দিয়ে যাননি তিনি নিজের জীবনটাকেও উৎসর্গ করে দিয়েছিলেন। তিনি বলতেন, যা কিছু হোক দেশ স্বাধীন হবেই। শুধুমাত্র একজন রাজনৈতিক নেতা হিসেবে না। যুদ্ধের রণকৌশলে তার এই বক্তৃতা কত যে কার্যকর এবং তার প্রতিটি পদক্ষেপ যে কত বাস্তবমুখী সেটাই হচ্ছে সবচেয়ে বড় কথা। লাখো শহীদ জীবন দিয়েছে, মা-বোনেরা নির্যাতিত হয়েছে, তাদের প্রতিও শ্রদ্ধা জানানোর পাশাপাশি জাতির পিতার নির্দেশে যে সকল নেতৃবৃন্দ যুদ্ধ পরিচালনা করে আমাদের বিজয় এনে দিয়েছেন তাদের প্রতিও শ্রদ্ধা জানান তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘১৫ই আগস্ট বাঙালির জীবনে একটা কালো অধ্যায় হিসাবে এসেছে। কারণ যারা পরাজিত হয়েছিল তারা বসে ছিল না। তারা সর্বক্ষণ ষড়যন্ত্রেই ব্যস্ত ছিল। তাই যখন একটা যুদ্ধবিধস্ত দেশ গড়ে তুলে অর্থনৈতিক মুক্তির পথে জাতির পিতা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন, সেই সময় ১৫ই আগস্টের ঘটনা ঘটলো।’

তিনি বলেন, ‘যেখানে পাকিস্তানি শাসকরা তাকে (বঙ্গবন্ধু) বারবার হত্যার চেষ্টা করেছে। ফাঁসির আদেশ দেয়া সত্ত্বেও ফাঁসি দিতে পারেনি। আর যে বাঙালির জন্য তিনি নিজের জীবনটাকেও উৎসর্গ করেছেন, যে বাঙালির জন্য সারাবাজীবনের সব স্বাদ-আহলাদ বিসর্জন দিয়েছিলেন, দিনের পর দিন কারাগারের অন্তরালে নির্যাতন ভোগ করেছেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যে বাঙালিকে আত্মপরিচয়ের সুযোগ দিয়ে গেছেন। একটা রাষ্ট্র দিয়ে গেছেন, একটা জাতি হিসাবে স্বীকৃতি দিয়ে গেছেন। কি দুর্ভাগ্য যে তাদের হাতেই জীবন দিতে হল। শুধু বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবই না গোটা পরিবার। আমরা দুই বোন বিদেশে ছিলাম বলে বেঁচে ছিলাম।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘৭৫’ এর পরে এই ভাষণটা নিষিদ্ধ ছিল। এ ভাষণ বাজানো যাবে না। দেয়া যাবে না। অলিখিত একটা নিষেধাজ্ঞা জারি ছিল। বাংলাদেশের জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই এই কারণে ১৯৮০ সাল থেকেই যে সংগ্রাম তারি সাফল্য। আজ ৫০ বছর পূর্তিতে আমরা দেখে যেতে পারলাম যে, ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণ আজ বিশ্বস্বীকৃতি পেয়েছে এবং বাংলাদেশের মানুষও আজকে এটা শুনতে পাচ্ছে, জানতে পারছে, চর্চা করতে পারছে আর আগ্রহ বাড়ছে। এর অর্ন্তনিহিত অর্থ খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে। এখানেই তো সবথেকে বড় সাফল্য।’

তিনি আরো বলেন, ‘বাঙালি জাতি আজকে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশ আজকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে। ইনশাআল্লাহ জাতির পিতার আকাঙ্খা আমরা পূরণ করবো। বাংলাদেশের মানুষ তার রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক মুক্তি পাবে। সে মুক্তির পথে আমরা অনেক দূরে এগিয়ে গেছি।’

প্রকৌশল নিউজ/এস